টিকটকে দেখে এক শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধী যুবককে প্রায় পাঁচ বছর আগে নিজের হারিয়ে যাওয়া ছেলে বলে দাবি করেছে একটি পরিবার। তবে এ দাবি মানতে নারাজ যুবকটির বর্তমান পরিবার।
২১ বছর বয়সী ওই যুবক থাকেন ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার শেরপুর ইউনিয়নের হাসেনপুরে। স্থানীয়রা তাকে আবুল কালামের ছেলে মিলন হিসেবে চেনেন।
তবে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার তাড়াবো পৌরসভার কাজী অরুণের দাবি, মিলন নয়, ওই যুবকের নাম কাজী আলভী, তার ছেলে। তিনি জানান, আলভীর জন্ম ২০০০ সালে। ২০১৬ সালের নভেম্বরে আলভী বাসা থেকে বেরিয়ে যায়। অনেক খোঁজাখুঁজির পরও তাকে না পেয়ে রূপগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দেয়াসহ মাইকিংও করা হয়েছে। তবু পাননি ছেলের খোঁজ।
অরুণের ভাই আক্তার হোসেন বলেন, ‘১০ দিন আগে আমার চাচাতো বোনের ছেলে রিফাত একটা টিকটক ভিডিওতে আলভীকে দেখে আমাদের সবাইকে দেখায়। আমরা সবাই তাকে চিনতে পারি। যে ফেসবুক আইডি থেকে টিকটক ভিডিওটি পোস্ট করা হয়েছিল সেই সোহাগ মিয়ার সঙ্গে ১৯ সেপ্টেম্বর যোগাযোগ করি। সোহাগ মিয়ার বাড়ি শেরপুর ইউনিয়নের পাঁচরুখি গ্রামে। তিনি মাইক্রোবাস ভাড়া দেন। তিনিই আলভীকে নিয়ে ভিডিওটি বানিয়েছিলেন। তার কাছ থেকে আলভীর বর্তমান ঠিকানা পাওয়া যায়।’
আক্তার হোসেন জানান, গত মঙ্গলবার তারা পরিবারের কয়েকজন মিলে হাসেনপুর গ্রামে আবুল কালামের বাড়িতে যান। সেখানে স্থানীয় চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে দুই পরিবারের মাঝে আলোচনা হয়।
কোনো সমাধান না হওয়ায় তারা এখনও নান্দাইলে রয়েছেন। প্রয়োজনে আইনের আশ্রয় নেবেন।
আলভীকে মিলন বলে দাবি করা বাবা আবুল কালাম জানান, তারা একসময় ঢাকার পান্থপথে থাকতেন। সেখান থেকে তার ছোট ছেলে মিলন হারিয়ে যায়। এর আট মাস পর হাতিরঝিল থেকে তারা মিলনকে খুঁজে পান। বেশ কয়েক বছর পর গ্রামের বাড়ি ফিরে আসেন। তখন থেকে তারা এখানেই আছেন।
তবে কত সালে এ ঘটনা ঘটেছে তা বলতে পারেননি আবুল কালাম।
স্থানীয় চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন ভূঁইয়া জানান, মঙ্গলবার দুই পরিবারকে নিয়ে কয়েক ঘণ্টা সালিশ করা হয়েছে। তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে মনে হচ্ছে ছেলেটি নারায়ণগঞ্জের হতে পারে। তবে এখনকার পরিবার তা মানতে রাজি না হওয়ায় ডিএনএ টেস্টের পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
আবুল কালাম বলেন, ‘ডিএনএ টেস্টে যদি প্রমাণ হয় মিলন অন্য পরিবারের সন্তান, তাহলে সেই পরিবারকে তাদের সন্তান ফিরিয়ে দেব।’
নান্দাইল মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান আকন্দ জানান, বিষয়টি স্থানীয় পর্যায়ে সমাধানের জন্য ইউপি চেয়ারম্যানকে বলা হয়েছে। যদি সমাধান না হয়, তাহলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Discussion about this post