মিথ্যা তথ্য দিলে জাতীয় সঞ্চয়পত্র কেনায় দণ্ডের বিধান রেখে নতুন আইনের খসড়ায় সায় দিয়েছে সরকার। গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা বৈঠকে ‘সরকারি ঋণ আইন, ২০২১’-এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়।
পরে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, সরকারি সিকিউরিটিজ বা জাতীয় সঞ্চয় স্কিমের আওতায় ইস্যু সার্টিফিকেটের স্বত্ব অর্জনের উদ্দেশ্যে মিথ্যা বক্তব্য দিলে অনধিক ছয় মাস মেয়াদের কারাদণ্ড বা অনধিক এক লাখ টাকা বা উভয় দণ্ড হতে পারে।
তিনি বলেন, ‘যে টাকা-পয়সা ডিপোজিট করবে, তা নিয়ে যদি মিথ্যা কথা বলে, তা কোথা থেকে এলো ইনকাম ট্যাক্স ইস্যু করা না থাকে, সে যদি মিথ্যা তথ্য দেয়, তাহলে সেক্ষেত্রে এ শাস্তি দেয়া হবে।’
তিনি জানান, নানা সময় ‘সরকারি ঋণ অ্যাক্ট, ১৯৪৪’-এর প্রয়োজনীয় সংশোধন করা হলেও ঋণ পদ্ধতি ও আমানত ব্যবস্থা অনেক পরিবর্তন হওয়ায় নতুন আইন করতে হচ্ছে।
সরকারি ঋণ ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর জন্য অধিকতর আধুনিক প্রক্রিয়ায় ঋণ সংগ্রহ, টেকসই ঋণনীতি ও পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং ঋণ কৌশলপত্র প্রস্তুত, ঋণের ঝুঁকি নিরূপণ ও সরকারের দায় হিসাবায়নের পথ অধিকতর সম্প্রসারণ করার লক্ষ্যে আইনে ৪০টি ধারাসহ নতুন আইনটি করা হচ্ছে বলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান।
তিনি বলেন, আইটির মূল বিষয় হচ্ছে, সরকার বাজেট ঘাটতি পূরণের লক্ষ্যে অর্থায়ন বা অন্য কোনো উদ্দেশ্যে সরকার কর্তৃক গৃহীত বা দেশি-বিদেশি মুদ্রায় গৃহীত সুদ বা মুনাফাযুক্ত বা সুদ বা মুনাফামুক্ত যে কোনো প্রকারের ঋণ ও বিনিয়োগ সংগ্রহ করতে পারবে।
সাধারণ মানুষের কাছ থেকে সরকার যে ঋণটা নেবে, তার যথাযথ গ্যারান্টি থাকবে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
তিনি বলেন, ‘আইনে সরকারি ঋণ অফিসগুলোর ভূমিকা ঠিক করে দেয়া হবে—কে কী করবে। শরিয়াহিভত্তিক সরকারি সিকিউরিটি ব্যবস্থাপনা-সংক্রান্ত বিধানাবলি প্রস্তাব করা হয়েছে। আপনারা জানেন, বছর আগে সুকুক নামে একটি বন্ড বাংলাদেশে ব্যাংক শুরু করেছে। ভালো সাড়া পাওয়া গেছে। যে আশা করা হয়েছিল, তার দ্বিগুণ সাড়া পাওয়া গেছে এবং সেটি হচ্ছে শরিয়াহিভত্তিক।’
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘স্বাভাবিক ডিপোজিট ব্যবস্থার পাশাপাশি শরিয়াহিভত্তিক ডিপোজিট ব্যবস্থার চিন্তাভাবনা করা হয়েছে। সুকুকটা সার্কুলার দিয়ে করা হয়েছিল, এখন আইনের মধ্যে করা হলো। এখন শুধু বিদেশিরা করতে পারে। আগামীতে দেশেও এটা করা যায় কি না চিন্তা করা হচ্ছে। সরকারি ঋণ আইনের মাধ্যমে কত টাকা হলো এবং এটির কী অবস্থা বা মুনাফা বা সুদ দেয়া হলো, তা জনগণকে জানানো হবে।’
Discussion about this post