এখন থেকে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে (বিকাশ, রকেট, ইউক্যাশ, এম ক্যাশ প্রভৃতি) ও স্থানীয় ডিজিটাল ওয়ালেটের মাধ্যমে দেশে আনা যাবে তথ্যপ্রযুক্তি (আইটি) খাতের বৈদেশিক আয়। গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা ও নীতি বিভাগ এ-সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে।
আইটি খাতের ক্ষুদ্র আয় সহজে প্রত্যাবাসনের জন্য মোবাইল ফোনে আর্থিক সেবা (এমএফএস) দেয়া প্রতিষ্ঠানগুলোকে এ সুযোগ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতদিন কেবল ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে এ-জাতীয় আয় প্রত্যাবাসনের সুযোগ ছিল।
নতুন নির্দেশ অনুযায়ী, বাংলাদেশ ব্যাংকের লাইসেন্স পাওয়া এমএফএস সেবা দেয়া প্রতিষ্ঠানগুলো, যেমন বিকাশ, রকেট ও এ-জাতীয় প্রতিষ্ঠানের ডিজিটাল ওয়ালেটের মাধ্যমে বৈদেশিক আয় প্রত্যাবাসন এবং আইটি খাতের রপ্তানিকারকদের ওয়ালেট হিসাবের মাধ্যমে করা যাবে। তবে এ ক্ষেত্রে মোবাইল ফোনে আর্থিক সেবা দেয়া প্রতিষ্ঠানগুলোকে কিছু নির্দেশ পরিপালন করতে হবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে দেয়া শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে, মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস প্রোভাইডারদের বিদেশি পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডারদের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হতে হবে। অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে সার্ভিস প্রোভাইডার, ডিজিটাল ওয়ালেট প্রোভাইডার কিংবা এগ্রিগেটরেরা বিদেশি পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডার হিসেবে কাজ করতে পারবে। এমএফএস প্রোভাইডাররা অনুমোদিত ডিলার ব্যাংকে সেটেলমেন্ট অ্যাকাউন্ট পরিচালনা করবে। বিদেশি পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডারদের মাধ্যমে প্রাপ্ত বৈদেশিক মুদ্রা নস্ট্রো হিসাবে জমা হওয়ার পর তা অনুমোদিত ডিলার ব্যাংক মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস প্রোভাইডারদের সেটেলমেন্ট হিসাবে টাকায় স্থানান্তর করবে। সেটেলমেন্ট হিসাবে জমাকৃত আইটি সেবা খাতের আয় সংশ্লিষ্ট রপ্তানিকারকের নামে পরিচালিত ডিজিটাল ওয়ালেটে জমা হবে।
বিদেশি পেমেন্ট পরিষেবা দানকারীরা এদেশে অনুমোদিত ডিলার ব্যাংক বৈদেশিক মুদ্রা কিংবা টাকা হিসাব পরিচালনা করতে পারবে। বিদেশি পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডারদের নামে পরিচালিত হিসাবে অনুমোদিত ডিলার ব্যাংক ওভারড্রাফ্ট সুবিধা দিতে পারবে। তবে ওভারড্রাফ্ট সুবিধার ক্ষেত্রে পেমেন্ট গ্যারান্টি থাকতে হবে বলে সার্কুলারে উল্লেখ করা হয়েছে।
রপ্তানিকারকরা বৈদেশিক মুদ্রায় রিটেনশন কোটা সুবিধা পেয়ে থাকেন। আলোচ্য সুবিধা এক্ষেত্রেও বলবৎ থাকবে। মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস প্রোভাইডারদের সেটেলমেন্ট হিসাবে অর্থ জমা করার আগে বৈদেশিক মুদ্রার প্রয়োজনীয় অংশ রিটেনশন কোটা হিসাবে জমা করা যাবে বলে সার্কুলারে বলা হয়েছে।
আইটি খাতের সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ সিদ্ধান্ত প্রশংসা করে বলেন, নীতিমালাটির আওতায় আইটি খাতের আয় সহজে প্রত্যাবাসিত হবে। এতে লাভবান হবেন সবাই।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদন নিয়ে ১৬ ব্যাংক এ সেবা দিচ্ছে। এগুলো হলো ব্র্যাক ব্যাংকের বিকাশ, ডাচ্-বাংলার রকেট, ইসলামী ব্যাংকের এম ক্যাশ, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের ইউক্যাশ, সাউথইস্ট ব্যাংকের টেলিক্যাশ, ওয়ান ব্যাংকের ওকে, মার্কেন্টাইল ব্যাংকের মাই ক্যাশ, প্রাইম ব্যাংকের প্রাইম ক্যাশ, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের স্পট ক্যাশ, ট্রাস্ট ব্যাংকের মোবাইল মানি ও মেঘনা ব্যাংকের ট্যাপ এন পে। এছাড়া রূপালী, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক এবং এনসিসি ও যমুনা ব্যাংক দিচ্ছে শিওর ক্যাশ সেবা। এ ছাড়া ‘সোনালী ই সেবা’ নামের মোবাইল অ্যাপ চালু করেছে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংক।
তবে ডাক বিভাগের ‘নগদ’ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের লাইসেন্সপ্রাপ্ত না হওয়ায় এসব সুবিধার আওতার বাইরে থাকবে।
Discussion about this post