প্রণোদনার ক্ষুদ্রঋণ বিতরণে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। দ্বিতীয়বার বা ২০২১-২২ অর্থবছরে কুটির, মাইক্রো, ছোট ও মাঝারি (সিএমএসএমই) শিল্প খাতে ১৯ হাজার ৩৪৫ কোটি টাকা বিতরণের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
তবে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য গঠিত ২০ হাজার কোটি টাকার তহবিল থেকে প্রথম বছর লক্ষ্যমাত্রার ৭৭ শতাংশ ঋণ বিতরণ করেছিল ব্যাংক। তাই শতভাগ বাস্তবায়নের নির্দেশনা দিয়ে নতুন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দিল নিয়ন্ত্রণ সংস্থাটি।
প্রসঙ্গত, প্রথম বছরে কটেজ, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি (সিএমএসএমই) খাতে কভিড-১৯ প্রণোদনা প্যাকেজের ঋণ বিতরণের লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হওয়ায় বাংলাদেশ ব্যাংক ১৪টি ব্যাংক এবং দুটি নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে (এনবিএফআই) কারণ দর্শানোর নোটিস দিয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সিএমএসএমই প্রণোদনা প্যাকেজের দ্বিতীয় পর্যায়ে ২০ হাজার কোটি টাকার মধ্যে ৫৭টি ব্যাংককে এ ঋণ বিতরণের টার্গেট দেয়া হয়েছে ১৯ হাজার ৩৪৫ কোটি টাকা। আর বাকি অর্থ বিতরণ করবে পাঁচটি নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ছয় ব্যাংক বিতরণ করবে দুই হাজার ৭৭০ কোটি টাকা। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের মধ্যে সবচেয়ে বেশি টার্গেট দেয়া হয়েছে অগ্রণী ব্যাংককে, ব্যাংকটি বিতরণ করবে ৮৯০ কোটি টাকা। এর পরে রয়েছে জনতা ৮০০ কোটি, সোনালী ৫০০ কোটি, রূপালী ৩০০ কোটি, বেসিক ২৫০ কোটি ও বিডিবিএল ৩০ কোটি টাকা।
বিশেষায়িত তিন ব্যাংককে ২৬০ কোটি টাকা বিতরণের টার্গেট দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক ২০০ কোটি, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (রাকাব) ৫০ কোটি ও প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক ১০ কোটি টাকা বিতরণ করবে। বিদেশি ৯ ব্যাংক বিতরণ করবে ১৯৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে ব্যাংক আল-ফালাহ্ ১০ কোটি টাকা, কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলন ৩০ কোটি, হাবিব ব্যাংক দুই কোটি, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক ১০০ কোটি, স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া (এসবিআই) ২০ কোটি, সিটি ব্যাংক এনএ পাঁচ কোটি, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান (এনবিপি) পাঁচ কোটি, এইচএসবিসি ২০ কোটি ও উরি ব্যাংক তিন কোটি টাকা বিতরণ করবে।
বেসরকারি ৩০ ব্যাংকের মধ্যে দুই ভাগে বিতরণের টার্গেট দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে যেসব ব্যাংক ইসলামি ব্যাংকিং করছে, তাদের টার্গেট পাঁচ হাজার ৯২৫ কোটি টাকা; আর যারা প্রচলিত ধারায় ব্যাংকিং করছে, সেসব ব্যাংকের টার্গেট দেয়া হয়েছে ১০ হাজার ১৯৫ কোটি টাকা। বেসরকারি ব্যাংকের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিতরণ করবে ইসলামী ব্যাংক। ব্যাংকটির টার্গেট দেয়া হয়েছে দুই হাজার ২৫০ কোটি টাকা।
এর পরে রয়েছে ব্র্যাক ব্যাংক এক হাজার ৪০০ কোটি টাকা, ইউসিবিএল এক হাজার ১০০ কোটি, এক্সিম ব্যাংক ৯০০ কোটি, আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক ৮৫০ কোটি, সাউথইস্ট ব্যাংক ৮৫০ কোটি, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক ৬০০ কোটি, প্রিমিয়ার ব্যাংক ৬০০ কোটি, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক ৫৫০ কোটি, পূবালী ব্যাংক ৫০০ কোটি, ন্যাশনাল ব্যাংক ৪৫০ কোটি ও ইস্টার্ন ব্যাংক ৪০০ কোটি টাকা।
এ ছাড়া এবি ব্যাংক ২৪০ কোটি টাকা, বিসিবিএল ৫০ কোটি, বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক ২০ কোটি, ব্যাংক এশিয়া ৩৫০ কোটি, ঢাকা ব্যাংক ২৪০ কোটি, ডিবিবিএল ৩৫০ কোটি, আইএফআইসি ব্যাংক ২৪০ কোটি, যমুনা ব্যাংক ২২০ কোটি, মেঘনা ব্যাংক ৫০ কোটি, মার্কেন্টাইল ব্যাংক ৩২০ কোটি, মিডল্যান্ড ব্যাংক ৬০ কোটি, মধুমতি ব্যাংক ৮০ কোটি, এমটিবিএল ২৬০ কোটি, এনসিসি ব্যাংক ৪১৫ কোটি, এনআরবি ব্যাংক ১২০ কোটি, এনআরবিসি ব্যাংক ১৭০ কোটি, ওয়ান ব্যাংক ২০০ কোটি, প্রাইম ব্যাংক ৩০০ কোটি, এসবিএসি ব্যাংক ২০০ কোটি, দি সিটি ব্যাংক ৪০০ কোটি, ট্রাস্ট ব্যাংক ২০০ কোটি, সীমান্ত ব্যাংক ১০ কোটি, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক ২৫ কোটি, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক ৩০০ কোটি, ইউনিয়ন ব্যাংক ৫০ কোটি ও উত্তরা ব্যাংকের টার্গেট ৬৫০ কোটি টাকা।
Discussion about this post